বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল হক আলোকে অর্থ আত্মসাৎ, চাকরি বাণিজ্য, কমিটি বাণিজ্য এবং বিভিন্ন অগঠনতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদকের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
জানা যায়, সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে অধ্যাপক সিরাজুল হক আলোর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ সভাপতির কাছে উত্থাপিত হতে শুরু করে। যার প্রেক্ষিতে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য তেজগাঁও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশীদকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তদন্ত কার্যক্রম চলাকালীন অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদককে সাময়িক অব্যাহতি প্রদানপূর্বক সবধরনের সাংগঠনিক এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রেখে পরিষদের ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদকের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায়, সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ সত্য। এরপর অধ্যাপক সিরাজুল হক আলোকে একটি কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাংগঠনিক ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপে বিরত থাকার কথা বলা হলেও অধ্যাপক সিরাজুল হক আলো স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্ত অমান্য করে একের পর এক সাংগঠনিক কার্যকলাপ চালিয়ে গিয়েছেন, যা গঠতান্ত্রিকভাবে অবৈধ বলে বিবেচিত।
এদিকে অধ্যাপক সিরাজুল হক আলো গত ২ অক্টোবর পরিষদের সভাপতিকে উল্লেখ করে কারণ দর্শানো নোটিশের একটি জবাব দিয়েছেন। কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবে অধ্যাপক সিরাজুল হক আলো তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের কোনো রকম জবাব না দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক মনগড়া কিছু বক্তব্য রেখেছেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১৭ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে স্টিয়ারিং কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সমগ্র বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে অধ্যাপক সিরাজুল হক আলোকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ, চাকরি বাণিজ্য, কমিটি বাণিজ্য এবং বিভিন্ন অগঠনতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদে তার সাধারণ সম্পাদকের পদসহ সকল প্রকার সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার অসুস্থতা এবং তৎকালীন দেশের রাজনৈতিক বৈরি পরিবেশের কারণে এর কার্যক্রম শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই দু-একটি অনুষ্ঠানের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তাঁরই গতিশীল নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনটি বিস্তৃত হয়।
বাবু/এমএ