কক্সবাজারে ওমরাহ্ ও হজ্ব কাফেলা এজেন্সির নাম দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। শুধু তাই নয় পাসপোর্ট, ভিসাসহ যাবতীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে ইতিমধ্যে লাপাত্তা দিয়েছে দুই এজেন্সি মালিক পরিচয়দাতা। জীবনের শেষ ইচ্ছে পবিত্র কাবা ঘরে তাওয়াফ করবেন ৭০ বছর বয়সী মোহাম্মদ শরীফ। পাসপোর্ট, ভিসাসহ সব ঠিকঠাক করে এমন সময়েই জানতে পারলেন বড় প্রতারক সিন্ডিকেটে পড়েছেন তিনি। শুধু তিনি নন, এমন শতশত হজ্ব ও ওমরাহগামী মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন কক্সবাজার শহরে শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলা ও পিসফুল হজ্ব কাফেলা নামের প্রতিষ্ঠান থেকে। ইতিমধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় ও কক্সবাজার আদালতে দুই প্রতারক ওমর ফারুক ও এইচ.এম আব্দুল গণির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভোক্তভোগীরা।
প্রতারণার শিকার হামিদ উল্লাহ জানান, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়দাতা মো. ওমর ফারুক ওমরাহ ভিসা প্রদানের কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সৌদি আরব যাওয়ার টিকিট সরবরাহ করলেও ফ্লাইট বাতিল করে। বন্ধ করে ফেলেছে ব্যবহারের মোবাইল। সদর থানার পেছনের হোটেল তাজসেবাস্থ তাদের অফিসে গেলে কাউকে পাওয়া যায় নি। দরজায় ঝুলছে তালা। হদিস মিলছেনা শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলার মালিক ওমর ফারুকের। তবে একটি মামলায় কারাগারে গ্রেফতার আছেন বলে তিনি শুনেছেন।
প্রতারণায় পিছিয়ে নেয় মোহাম্মদ আব্দুল গনিও। এই ব্যক্তি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা ও পাসপোর্ট নিয়ে আর ফেরত দেননি। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ওমরাহ হজ যাত্রীরা চরম ক্ষোভ জানিয়েছেন হামিদ উল্লাহ, আব্দুল মালেক, মোঃ শরিফ, খালেদা বেগম, আব্দুল শুক্কুর, বশির উল্লাহ মোস্তাক আহমদ ও হাফেজ আহমদসহ ২০ জন ভোক্তভোগী।
গত ৬ নভেম্বর মোঃ হামিদ উল্লাহ নামে এক ভোক্তভোগী কক্সবাজার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। যার সিআর মামলা নং-১৩৩৫। এর আগে মোহাম্মদ ইসমাইল নামক আরো একজন ভুক্তভোগি সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তিনি শহরের মধ্যম নুনিয়ারছড়া ফিশারীপাড়ার মৃত জাফর আলমের ছেলে।
ভোক্তভোগীদের অভিযোগ, সদর থানার পেছনের সড়কে হোটেল তাজসেবার ৩য় তলায় একটি কক্ষে শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলা নামে ট্রাভেল এজেন্সির সাইনবোর্ড টাঙিয়ে হজ্ব, ওমরাহ, ভিসা প্রসেসিং, বিমানের টিকিট বিক্রি ইত্যাদি সেবা প্রদানের নামে বিজ্ঞাপন প্রচার করে। তাতে আকৃষ্ট হয়ে সবাই নগদ টাকা, পাসপোর্ট জমা দেন। কিন্তু সবাই নিয়ে পালিয়ে গেছেন তারা।
সাইনবোর্ডে শাহ আবদুল মালেক হজ্ব কাফেলা উল্লেখ করলেও ভোক্তভোগীদের গ্রহণকৃত টাকার বিপরীতে রশিদ দিয়েছে পিসফুল হজ্ব কাফেলর নামে। যে প্রতিষ্ঠানটির হেড অফিস চট্টগ্রামে। তবে হজ্ব লাইসেন্স ১৪৯৬ ওমরাহ উমরাহ্ লাইসেন্স-৪২৫ এই দুই লাইসেন্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানান ভোক্তভোগীরা।