ঢাকার ধামরাই উপজেলায় নবান্ন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। স্বপ্ন ও সাধনার আমন ধান উঠছে কৃষকের ঘরে। আবহমান গ্রাম বাংলায় নবান্ন বাঙ্গালির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এবছর আমন ধানের ফলন ভালো হওয়াতে কৃষকদের ঘরে খুশির আমেজ। ধামরাইয়ের প্রতিটি গ্রামে ফিরে এসেছে নবান্ন উৎসবের আমেজ।
ধান কাটায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকদের। ঘরের আঙিনায় সোনালী ধানে ব্যস্ততা বেড়েছে ঘরের কৃষানী নারীদেরও। চলতি আমন মৌসুমে ধানের আবাদ হওয়ায় কৃষকের মনে খুশি অনুভূত হচ্ছে। তবে দাম নিয়ে একটু দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
উপজেলার। বালিয়া, আমতা, কুশুরা, চৌহাট, গাঙ্গুটিয়া, রোয়াইল সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তারা শ্রমিক নিয়ে কাটছেন মাঠের ধান। ধান কাটা হয়ে গেলে কেউ খেতে শুকাচ্ছেন, কেউ ট্রলি করে বাড়ি এনে মাড়াই করছেন। বাড়ির উঠোন জুড়ে নতুন ধানের ঘ্রাণ।
কৃষকদের বাড়িতে চলছে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি। মেয়ের জামাই ও আত্মীয়স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে এ উপলক্ষে। নতুন চালের পিঠা, পায়েস দিয়ে ধুমধামে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। গ্রামের বধুরা অপেক্ষা করেন বাপের বাড়িতে নাইওরে (বেড়াতে) যাওয়ার জন্য। পিঠা পায়েস আর নতুন চালের ভাতের সুগন্ধে ভরে উঠে মন।
বালিয়া ইউনিয়নের মাদারপুর এলাকার কৃষক ছালাম বলেন, এবার ফলন ভালো হয়েছে। যদিও ধানে এবার পোকা কিছুটা সমস্যা করেছে। দাম নিয়ে একটু চিন্তায় আছি। আশা করছি দাম পেলে লাভ করতে পারবো। আর নতুন ধান দিয়ে পিঠা-পুলি তৈরি করে মেহমান আপ্যায়ন চলছে। বিভিন্ন সময়ে কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য ও পরামর্শ আমাদের ফলন বাড়াতে সহযোগিতা করেছে ।
রাজাপুর বেগম আনোয়ারা গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ জহির রায়হান বলেন শীত মৌসুম মানেই বাংলার ঘরে ঘরে নতুন ধানের নবান্নের উৎসব। এ নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ। তবে প্রযুক্তির উৎকর্ষে দিনদিন গ্রামগুলোতে শহরের সংস্কৃতির প্রবাহে গ্রাম বাংলার এই নবান্ন উৎসব যেন হারিয়ে যেতে বসেছে।তবে সময় আসলে উৎসব ফিরে পাওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন এবার আমন মৌসুমে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ৩৫ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়া, সময়োপযোগী বৃষ্টি ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ আমন চাষে সুফল মিলেছে।