টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমএসআর (মেডিক্যাল ও সার্জিক্যাল রিইকুইজিট) টেন্ডারে অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে দুই ঠিকাদার। রবিবার দুপুরে মেসার্স শামসুল হক ফার্মেসী ও মেসার্স সাঈদ মেডিকেল হল নামের দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলোনায়তনে এ সংবাদ সম্মেল্লন করে।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, সর্বনিম্ন দরদাতাদের পরিবর্তে উচ্চ দরদাতাদের বরাদ্দ দেয়ায় সরকারের কয়েক কোটি টাকা গচ্ছা দিতে হবে। এই অনিয়মের অভিযোগে গত ৭ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে অভিযোগটি ডাকযোগে পাঠানো হয়েছিল। পুনমূল্যায়নের জন্য গত ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিট পর্যালোচনা করে মহামান্য কোর্ট টেন্ডারের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোর্টের আদেশ অমান্য করে টেন্ডারের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং মালামাল গ্রহণ করছে।
তারা আরও বলেন, গত ১৫ অক্টোবর হাসপাতাল ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের এমএসআর সামগ্রী ক্রয় করতে ঔষধপত্র, লিলেন, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, গজ ব্যান্ডেজ কটন, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট এবং আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য ৬টি গ্রুপে দরপত্র আহ্বান করে। এই দরপত্রে টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ঠিকাদার অংশ গ্রহণ করেন।
এর মধ্যে মেসার্স শামসুল হক ফার্মেসী, মেসার্স শামসুল হক এন্টারপাইজ, মেসার্স সাঈদ মেডিকেল হল নামে আমরা টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করি। শিডিউলে উল্লেখিত সকল শর্তাবলী পূরন করে আমরা তিন প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করি। দাখিলের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টেন্ডারগুলো অনলাইনে (ইজিপি) ওপেনিং শিট প্রকাশ করে। প্রকাশিত শিটে দেখা যায় নন ইডিসিয়েল মেডিসিন গ্রুপে ছয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহণ করে।
মেসার্স সাঈদ মেডিকেল হল এক সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রথম হয়। মেডিকেল যন্ত্রপাতি গ্রুপে পাঁচ জন অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে মেসার্স শামসুল হক ফার্মেসী সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রথম হয়। গজ, ব্যান্ডেজ কটন গ্রুপে ছয় জন অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রথম হয়। লিলেন গ্রুপে ছয় জন ঠিকাদার অংশ গ্রহণ করেন। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রথম হয়। আসবাবপত্রের গ্রুপে ছয় জন অংশ গ্রহণ করে। মেসার্স শামসুল হক ফার্মেসী সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রথম হয়। তবে নিয়মনীতি না মেনে সর্বোচ্চ দরদাতাদের বরাদ্দ দিয়েছে হাসপাতালের পরিচালক।
তারা আরও বলেন, আমরা শিডিউলে উল্লেখিত সকল শর্তাবলী পূরন করে আমাদের তিন প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এই তিন প্রতিষ্ঠানের দরপত্র বাতিল করে দরপত্র যাচাই বাচাই কমিটি। যা আইনসঙ্গত হয় নাই। বরাদ্দ দেয়ার আগে নমুনা চাওয়ার নিয়ম থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা মানেনি। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৮ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৬ বিধি ভঙ্গ করে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর হাসপাতালের পরিচালক পছন্দের ঠিকাদারদের বরাদ্দ দিয়েছেন। এতে সরকারের কয়েক কোটি টাকা নষ্ট হবে। এ অনিয়ম বন্ধে তারা কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ড: মো আব্দুল কুদ্দুস এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।